যারা ব্লগিং সম্বন্ধে মোটামোটি জানেন, তাদের কাছে Blogger এবং Wordpress দুইটি কমন নাম। বর্তমানে এই দুইটিই অত্যন্ত জনপ্রিয় প্লাটফর্ম। যারা নতুন ব্লগিং শুরু করার চিন্তা করছেন তারা প্রায়ই একটি বিষয় নিয়ে কনফিউশনে থাকেন। তা হলো, কোন প্লাটফর্ম দিয়ে শুরু করবেন।
আর আপনাদের এই কনফিউশন দূর করার জন্যই আমার এই পোস্ট। নিচে ব্লগার এবং ওয়ার্ডপ্রেসের ভালো-মন্দ এবং সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে আলোচনা করছি, যা আপনার সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে। পোস্ট টি ভালোভাবে পড়ার জন্য অনুরোধ রইল।
➯ মালিকানা
• “ব্লগার.কম” হচ্ছে সার্চ জায়ান্ট গুগলের মালিকানাধীন ফ্রি ব্লগিং সার্ভিস। এখানে আপনি শুধুমাত্র একজন ব্লগ পাবলিশার বা প্রকাশক। তবে এর জন্য আপনার অনেক সুবিধাও হয়, নিচে গেলেই দেখতে পাবেন।
◦ কিন্তু, অন্যদিকে “ওয়ার্ডপ্রেস” হলো একটি স্বাধীন কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (CMS) যা বিনামূল্যে ডাউনলোড করে আপনি নিজের ওয়েবসাইটে ব্যবহার করতে পারবেন। এক্ষেত্রে ওয়েবসাইটের সকল মালিকানা আপনার হাতে।
➯ খরচ
• খরচ এর দিক বিবেচনায় Blogger বেশি সাশ্রয়ী, কারণ, এখানে আপনার ব্লগের সকল দায়ভার গুগলের। আর আপনি বিনামূল্যেই পাবেন আনলিমিটেড ব্যন্ডওয়াইডথ, সাবডোমেইন এবং অসাধারণ থিম। যার ফলে ব্লগার নতুনদের জন্য সেরা চয়েজ হবে।
◦ অন্যদিকে Wordpress ব্যবহার করার জন্য নিজস্ব ডোমেইন এবং হোস্টিংয়ের দরকার হয়। তাই আপনাকে ডোমেইন এবং হোস্টিং এর পেছনে ভালো পরিমাণ টাকা খরচ করতে হবে। আপনার যদি খরচ নির্বাহ করার সামর্থ থাকে, তাহলে আপনি এটি ব্যবহার করতে পারেন।
➯ সিকিউরিটি
• ওয়েবসাইটের ডেটা সেইফ রাখতে সিকিউরিটি একটা গুরুত্বপুর্ণ বিষয়। ব্লগার যেহেতু গুগলের সার্ভারের মাধ্যমে পরিচালিত হয় তাই এর সিকিউরিটি গুগল নিজেই রাখে। আপনি যে জিমেইল দিয়ে ব্লগারে অ্যাকাউন্ট খুলেছেন সেই জিমেইলকে সিকিউর রাখতে হবে। বাকী সিকিউরিটির দায়িত্ব গুগলের উপর ছেড়ে দিতে পারেন।
◦ তবে, ওয়ার্ডপ্রেসে যেহেতু বিভিন্ন Plugin ও Theme ব্যবহার করা হয় তাই এসব থিম বা প্লাগইনে দূর্বলতা থাকলে আপনার সাইট হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। প্রতিদিন বিশ্বে যতগুলো ওয়েবসাইট হ্যাক করা হয়, তার মধ্যে ওয়ার্ডপ্রেস সাইটের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। তবে ওয়ার্ডপ্রেসে কতগুলো প্লাগইন আছে যেগুলো ব্যবহার করে সিকিউরিটি বাড়ানো যায়।
➯ সহজবোধ্যতা
➯ সহজবোধ্যতা
• ব্লগার পরিচালনা করা অনেক সহজ। ব্লগিং সম্বন্ধে অজ্ঞ কোনো ব্যক্তিও সহজেই ব্লগার ব্যবহার করতে পারবে। কেননা এর ড্যাসবোর্ড অনেক সাজানো, পরিষ্কার এবং এর ফাংশনালিটি কম।
◦ কিন্তু ওয়ার্ডপ্রেস এর ফাংশন বেশি তাই এটা পরিচালনা করাও অনেক কঠিন। তবে একবার শিখে গেলে তা আপনার জন্য অনেক উপকারে আসবে।
➯ এসইও (SEO - Search Engine Optimization)
• আপনি যদি এসইও বিষয়ে একেবারেই অজ্ঞ হন তাহলে আপনার জন্য ব্লগারের চেয়ে ভালো প্লাটফর্ম আর নেই। কারণ, যেহেতু ব্লগার গুগলের মালিকানাধীন তাই এটি ডিফল্টভাবেই এসইও ফ্রেন্ডলি। তবে ব্লগারে অ্যাডভান্স লেবেলের এসইও করা যায় না।
◦ ওয়ার্ডপ্রেস ডিফল্টভাবে SEO Structure ফলো না করলেও এটি বেশ এসইও ফ্রেন্ডলি। তাছাড়া বিভিন্ন প্লাগইন ব্যবহার করে অ্যাডভান্স লেবেলে এসইও করা সম্ভব।
➯ কাস্টমাইজেশন
ওয়ার্ডপ্রেস এর চেয়ে ব্লগার এর কাস্টমাইজেশন অনেক সহজ। যদিও ওয়ার্ডপ্রেস কাস্টমাইজেশন করতে কোডিং জানা লাগে না। তবে আপনি যদি “Html, Css” জানেন, তাহলে ব্লগারে অনেক সহজেই কাস্টমাইজেশন করতে পারবেন।
↝ আমার পরামর্শ ↜
যদি আপনি ব্লগিং এ নতুন হন আর প্রাথমিক অবস্থায় কোন টাকা খরচ করতে না চান তবে আপনার ব্লগার বেছে নেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। বাকীটা আপনার উপর, আপনার যেটা ভালো লাগবে সেটা দিয়েই শুরু করুন। মনে রাখবেন, ব্লগের কনটেন্ট হচ্ছে সবচেয়ে বেশি জরুরী। আপনার ব্লগ ব্লগার নাকি ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করা হয়েছে, তাতে কিছুই যায় আসে না।
আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা। আমার ব্লগে ব্লগার রিলেটেড বিভিন্ন টিপস এবং ট্রিকস নিয়ে পোস্ট করা হয়, চাইলে সেগুলোও দেখে আসতে পারেন।
0 Comments
Write your opinion