যারা নিয়মিত বিভিন্ন কাজের জন্য ভিডিও চ্যাট সফটওয়্যার ব্যবহার করেন অথবা যারা আত্মীয়স্বজন কিংবা বন্ধুবান্ধবের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করতে চান, তাদের জন্য আজকের আর্টিকেলে ১০ টি সেরা ভিডিও চ্যাট অ্যাপ নিয়ে আলোচনা করবো।
অ্যান্ড্রয়েডের জন্য ইতিমধ্যে প্রচুর পরিমাণ ভিডিও চ্যাট অ্যাপ তৈরী হয়েছে। আজকের পোস্টে ভিডিও চ্যাটিং অ্যাপগুলো হাইলাইট করা হবে। সবগুলো অ্যাপই বিনামূল্যে ডাউনলোড করা যায় এবং এগুলো লাইফটাইম ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
সাধারণ কাজের জন্য অ্যাপগুলো আরামেই ব্যবহার করা যাবে। কিন্তু আপনি যদি ব্যবসায়িক বা প্রফেশনাল কাজে ভিডিও চ্যাট সফটওয়্যার ব্যবহার করতে চান, তাহলে অ্যাপগুলোর পেইড ভার্সন কিনলে বেশি সুবিধা পাবেন।
রিলেটেড পোস্টঃ স্মার্টফোনে আসক্তি কমানোর কার্যকরী ৫ টি অ্যাপস!
গুগল ডুও সবচেয়ে সহজ ভিডিও চ্যাট অ্যাপগুলোর মধ্যে একটি। শুধুমাত্র লগ ইন করে নম্বর ভেরিফাই করলেই আপনি ভিডিও চ্যাট করার জন্য প্রস্তুত। সাধারণ ফোন কল করার মতোই আপনি অন্যান্য গুগল ডুও ব্যবহারকারীদের ভিডিও কল করতে পারেন। এটি একটি ক্রস প্ল্যাটফর্ম অ্যাপ। অর্থাৎ, এটি আইওএস এবং অ্যান্ড্রয়েডের মধ্যে কাজ করতে পারে। ভিডিও কলিং অ্যাপ্লিকেশনগুলির পক্ষে এটি ব্যবহার করা অনেক সহজ এবং এটা সত্যিই খুব ভালো।
জুম প্রফেশনাল কাজের জন্য সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। এটি সব ধরনের ডিভাইস সাপোর্ট করে। অ্যাপটিতে রয়েছে স্ট্যান্ডার্ড কিছু ফিচার, যা একে তুমুল জনপ্রিয় করে তুলেছে। করোনা মহামারীর এ সময়ে জুম অ্যাপটি ভিডিও চ্যাটের জন্য সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হওয়া অ্যাপ। তবে এতে কিছু নিরাপত্তা ত্রুটিও দেখা গেছে, যার ফলে বিভিন্ন দেশ এটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। তবে আপনার ব্যক্তিগত বা গ্রুপ ভিডিও চ্যাটের জন্য অ্যাপটি সেরা।
ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার গ্রহের অন্যতম জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ। আমরা কমবেশি সবাই অ্যাপটির সাথে পরিচিত। অ্যাপটিতে ভিডিও চ্যাট তুলনামূলক ভাল কাজ করে। যেহেতু প্রচুর পরিমাণ লোক ফেসবুক ব্যবহার করে, তাই কোনো নতুন প্ল্যাটফর্মে যাওয়ার চেয়ে মেসেঞ্জার ব্যবহার করা বেশি সহজ। এটি সম্ভবত এই পোস্টের ভিডিও চ্যাট অ্যাপগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সুবিধাজনক।
স্কাইপ সব ধরনের ডিভাইসের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিডিও চ্যাট অ্যাপ্লিকেশন। তবে এর অ্যান্ড্রয়েড ভার্সনটি কম্পিউটার ভার্সনের মতো অতটা নিখুঁত নয়, তবে এটি দিয়ে সাধারণ কাজগুলো করা যাবে। আপনি সর্বোচ্চ ২৫ জনের সাথে গ্রুপ ভিডিও কল করতে পারবেন। অ্যাপটিতে টেক্সট চ্যাট করা যায়। অ্যাপটির মোবাইল ভার্সন আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে।
ভাইবার অ্যাপ দিয়ে আগে শুধু ভয়েস কল করা যেতো। পরে এটি একটি পরিপূর্ণ মেসেজিং অ্যাপ হিসাবে লঞ্চ হয়েছে। এখনও আগের মতো ভয়েস ফোন কল করা যায়। পাশাপাশি এতে চ্যাট, ভিডিও কল এবং আরও অনেক ফিচার আছে। অ্যাপটি আন্তর্জাতিকভাবে অনেক জনপ্রিয়। তবে অ্যাপটি সামান্য ভারী হওয়াতে কম স্টোরেজের মোবাইলে ব্যবহার করতে সমস্যা হতে পারে।
হোয়াটসঅ্যাপ এখন পর্যন্ত অন্যতম সেরা মেসেজিং অ্যাপগুলোর একটি। এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা এক বিলিয়নের ওপরে। আগে এটিতে শুধুমাত্র চ্যাট করা যেতো। ফেসবুক এই অ্যাপটিকে কিনে নেয়ার পর, অ্যাপটিতে ভয়েস কলিং, ভিডিও কলিং এবং আরও অনেকগুলো ফিচার যুক্ত হয়েছে। এর ভিডিও কলিং খুব ভাল কাজ করে এবং এটি কোনো সমস্যা ছাড়াই সহজে ব্যবহার করা যায়।
ডিসকর্ড মূলত গেমারদের জন্য তৈরি করা হয়েছে। আপনি এখানে যেকোনো বিষয় সম্পর্কে বিভিন্ন লোকদের সাথে চ্যাট করতে পারেন। অ্যাপ্লিকেশনটি বেশিরভাগই গ্রুপ চ্যাট, ডিএম, এবং গেমারদের জন্য ভয়েস চ্যাটে ফোকাস করে। তবে, এতে ভিডিও চ্যাট ফাংশনও আছে।
স্ন্যাপচ্যাট এর সোশ্যাল ফিচার যেমনঃ ২৪ ঘন্টার মধ্যে ছবি এবং ভিডিও শেয়ার করার জন্য কমবয়সীদের কাছে অধিক জনপ্রিয়। এখানে সর্বোচ্চ ১৬ জন একসাথে গ্রুপ ভিডিও চ্যাট করতে পারে। ভিডিও চ্যাটে অনেকগুলো মজাদার ফিল্টার আছে, যেগুলো ব্যবহার করে মুখের অঙ্গভঙ্গি পরিবর্তন করা যায়।
জাসটক হলো কম পরিচিত ভিডিও চ্যাট অ্যাপগুলোর মধ্যে একটি। এটি গুগল ডুওর মতো একটি অ্যাপ যেখানে ভিডিও কল হলো প্রধান ফিচার। অ্যাপটিতে আপনার পছন্দ মতো থিম যুক্ত করার অপশন রয়েছে। অ্যাপটি গ্রুপ চ্যাট, এনক্রিপশন এবং ক্রস প্ল্যাটফর্ম সাপোর্ট করে। অ্যাপটি বিনামূল্যে ডাউনলোড এবং ব্যবহার করা যাবে।
কিক একটি টেক্সট মেসেজিং অ্যাপ। অ্যাপটিতে গ্রুপ চ্যাট, বিভিন্ন মিডিয়া যেমন (জিআইএফ, ভিডিও, ইমেজ) এবং স্টিকারের মতো কিছু ফিচার রয়েছে। মোবাইল ফোন গেমারদের জন্য Kik একটি ভালো অ্যাপ। আমি আগে যখন "Clash of Clans" খেলতাম, তখন এটি ব্যবহার করেছি।
এই পোস্টটি দেখুনঃ অ্যান্ড্রয়েডের জন্য সেরা ৫ টি ব্যাটারী সেভার অ্যাপ!
ব্যক্তিগত চ্যাট করতে চাইলে Messenger, Google Duo বা Whatsapp সবচেয়ে ভালো হবে। যদি অনেকজন একসাথে গ্রুপ চ্যাট করতে চান, তাহলে Zoom, Skype এবং Discord ব্যবহার করতে পারেন।
এখানে দেয়া সবগুলো অ্যাপই বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায়। অ্যাপগুলো প্রচুর লোকেরা ব্যবহার করে এবং প্লে স্টোরে এদের অনেক ভালো রেটিং রয়েছে। তাই এখানে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য চুরির কোনো ভয় নেই। যদি আপনার জানামতে কোনো ভালো ভিডিও চ্যাট অ্যাপ থাকে, যা আমরা এই পোস্টে উল্লেখ করি নি, তাহলে কমেন্টে জানাতে পারেন।
0 Comments
Write your opinion