⦿ রেইনবো ট্রি
⦿ তারার সমুদ্র
এই উজ্জ্বল নীল আলো আসলে কোনো তারাবাতির নয়। এটি এক ধরণের সামুদ্রিক ফাইটোপ্লাঙ্কটন। ফাইটোপ্লাঙ্কটনের নাম ডিনোফ্লাজেলাটিস। এইসব ফাইটোপ্লাঙ্কটনে রয়েছে লুসিফেরাস নামক রাসায়নিক উপাদান যা আলো সৃষ্টি করতে পারে।
⦿ অ্যান্টার্কটিকার রক্ত জলপ্রপাত
অস্ট্রেলিয়ান ভূতাত্ত্বিক গ্রিফিথ টেইলর ১৯১১ সালে অ্যান্টার্কটিকায় একটি রক্তের জলপ্রপাত আবিষ্কার করেছিলেন। অনেকদিন ধরে এটি অ্যান্টার্কটিকার একটি বিরাট রহস্য ছিল।
পরে আলাস্কা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এই রহস্যটি সমাধান করেন। মাটিতে থাকা অনেক পরিমান আয়রণ ও সালফার এর কারণে এখানকার পানির রঙ লাল। আর এই লাল রঙের ফলেই সাদা বরফের ওপর এটি রক্তের মতো দেখায়।
স্থাপনাটি নরওয়ের দুর্গম ভালবার্ড দ্বীপপুঞ্জের স্পিটসবার্গেন দ্বীপে অবস্থিত। স্থাপনাটির নাম ভালবার্ড বিশ্ব বীজ ভল্ট (Svalbard Global Seed Vault)। এখানে বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ফসলের বীজ সংরক্ষিত রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বীজ সংরক্ষণাগারের বীজগুলো প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অব্যবস্থাপনা কিংবা যুদ্ধকালীন বিপর্যয়ের কারণে অনেক সময় নষ্ট হয়ে যায়।
তাছাড়া তৃতীয় কোনো বিশ্বযুদ্ধ কিংবা বিশ্বব্যাপী বড় ধরণের কোনো দুর্যোগের কারণে আমাদের চাষকৃত ফসলের অনেক জাত বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার আশংকা আছে। এ লক্ষ্যে নরওয়ে সরকার ও অন্যান্য বিশ্ব সংস্থার সহযোগিতায় ক্যারি ফোলারের উদ্যোগে ২০০৬ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
এখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জিন ব্যাংকগুলো তাদের স্থানীয় ফসলের বীজ সংরক্ষণের জন্য পাঠাতে পারে। ভবনটি এমনভাবে তৈরী করা হয়েছে যে, যদি বিদ্যুৎ সরবরাহ দীর্ঘ সময় বন্ধও থাকে তবু প্রাকৃতিকভাবেই যুগের পর যুগ বীজগুলো অঙ্কুরোদমের উপযোগী হয়ে সংরক্ষিত থাকতে পারে। বিশ্বে যত উচ্চ নিরাপত্তাবেষ্টিত ভবন আছে, এটি তার একটি।
এখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জিন ব্যাংকগুলো তাদের স্থানীয় ফসলের বীজ সংরক্ষণের জন্য পাঠাতে পারে। ভবনটি এমনভাবে তৈরী করা হয়েছে যে, যদি বিদ্যুৎ সরবরাহ দীর্ঘ সময় বন্ধও থাকে তবু প্রাকৃতিকভাবেই যুগের পর যুগ বীজগুলো অঙ্কুরোদমের উপযোগী হয়ে সংরক্ষিত থাকতে পারে। বিশ্বে যত উচ্চ নিরাপত্তাবেষ্টিত ভবন আছে, এটি তার একটি।
যাক, মহাযুদ্ধে এই মানবসভ্যতা ধ্বংস হয়ে গেলেও নতুন সভ্যতা এই বীজগুলোর সন্ধান লাভ করতে পারবে!
⦿ জারের মালভূমি
মধ্য লাওসের জিয়েনখাউয়াং প্রদেশে প্রায় এক হাজার বিশাল বড়ো প্রাচীন পাথরের কলস বা জার একটি মালভূমি জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে। কিছু কিছু জার ১০ ফুট লম্বা এবং কয়েক টন ওজনের।
প্রত্নতাত্ত্বিকদের ধারণা এই কলস আকৃতির পাথরের জারগুলো ২০০০ বছরেরও বেশি পুরানো। জারগুলো কে বা কারা বানিয়েছে এবং কেনো বানিয়েছে তা নিয়ে সুস্পষ্টভাবে কিছুই জানা যায়নি। তবে, এ সম্পর্কে সর্বাধিক প্রচলিত তত্ত্ব হলো, এই জারগুলো অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল।
⦿ সাহারা মরুভূমির নীল চোখ
এটি Richat Structure নামে পরিচিত সাহার মরুভূমির মাঝে ৩০ মাইল প্রশস্ত একটি বৃত্তাকার বৈশিষ্ট্য যা দেখতে মরুভূমির মাঝখানে একটি বিশাল দৈত্যাকার চোখের মতো মনে হয়।
এটি নিয়ে গবেষকদের মধ্যে অনেক মতভেদ আছে। অনেকে মনে করেন এটি প্রাচীন গ্রিক মাইথোলজীর হারিয়ে যাওয়া অ্যাটলান্টিস শহর, আবার অনেকে মনে করেন, দীর্ঘদিন আগে সাহারা যখন তৃণভূমি ছিলো, তখন পানি জমে জায়গাটি গোলাকার চোখের আকার ধারণ করে। আবার কারো কারো মতে, প্রাচীন কোনো এলিয়েন এখানে ঘাটি বানিয়েছিলো।
আরো বিস্তারিত জানতে পড়ুন - সাহারা মরুভূমির রহস্যময় নীল চোখ - জানলে অবাক হবেন
⦿ সিল্যান্ড
আমরা জানি পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট দেশ ভ্যাটিকান সিটি। তাই না? কিন্তু এর চেয়েও ছোট দেশ আছে। উত্তর মহাসাগরে ব্রিটেনের জলসীমায় সাফোক (Suffolk) উপকূলে অবস্থিত পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম এই দেশের নাম প্রিন্সিপ্যালিটি অব সিল্যান্ড।
শূন্য দশমিক ০২৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই দেশটির বাসিন্দা মাত্র ৫০ জন (২০১৩ সালের পরিসংখ্যান)। দেশটির নিজস্ব পতাকা, পাসপোর্ট, মুদ্রা সবই আছে।
⦿ বগা লেক
আপনি হয়তো কখনো এই লেকটির নাম শুনে থাকবেন। লেকটি আমাদের বাংলাদেশেই। লেকের নাম বগা বা বাগাকাইন লেক।
বম ভাষায় বগা মানে ড্রাগন। বমদের রুপকথা অনুযায়ী অনেক আগে এই পাহাড়ে এক ড্রাগন বাস করতো। ছোট ছোট বাচ্চাদের ধরে খেয়ে ফেলতো। গ্রামের কিছু লোক ড্রাগনটিকে হত্যা করলে তার মুখ থেকে আগুন আর প্রচন্ড শব্দ হয়ে পাহাড় বিস্ফোরিত হয়।
রুপকথার কাহিনী থেকে ধারণা করা হয়, লেকটি আগ্নেয়গিরীর অগ্ন্যুতপাতের কারণেই সৃষ্টি হয়েছে। এখনো এই লেকের সঠিক গভীরতা নির্ণয় করা যায় নি। ইকো মিটারে ১৫০+ Hz(হার্জ) পাওয়া গেছে।
প্রতিবছর রহস্যময় ভাবে বগা লেকের পানির রঙ কয়েকবার পালটে যায়। যদিও কোন ঝর্না নেই তবুও লেকের পানি পরিবর্তন হলে আশপাশের লেকের পানিও পরিবর্তন হয়।
⦿ নাট্রন লেক
শুধু ক্ষারীয় প্রজাতির বিশেষ ধরনের তেলাপিয়া মাছ আর লবণে আসক্তি আছে এমন অণুজীব ছাড়া কোনো প্রাণীর পক্ষে এই লেকে টিকে থাকা সম্ভব নয়। লেকটির তাপমাত্রা কখনো কখনো ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসেও পৌঁছে যায়। আর এর ক্ষারের মাত্রা বা পিএইচ লেভেল থাকে ৯ থেকে ১০.৫-এর মধ্যে।
![]() |
নাট্রন লেকের মৃত প্রাণীদের ছবিগুলো তুলেছেন ফটোগ্রাফার নিক ব্র্যান্ড |
সোডিয়াম কার্বনেটের মধ্যে সামান্য বেকিং সোডা বা সোডিয়াম বাই কার্বনেট দিলে যে প্রাকৃতিক যৌগ তৈরি হয়, তা থেকেই এসেছে লেকের নামটি। এই লেকের স্বচ্ছ পানিতে নিজের প্রতিবিম্ব দেখে ডুব দিলেই যে কোনো প্রাণী মারা যায় এবং চুনে জমে শক্ত হয়ে যায়। এ ছাড়া পানিতে উপস্থিত অণুজীবগুলো লাল রঞ্জক পদার্থ তৈরি করায় লেকের পানির রং রক্তের মতো লাল দেখায়।
⦿ লাইট পিলার
ভূমি থেকে আলোর রেখা উঠে গেছে সোজা উপরে, আকাশের দিকে। এক রঙ নয়, কয়েক রঙের বর্ণিল এই উৎসব দেখা যায় রাশিয়ার মস্কোতে।
প্রতিবছর অসংখ্য মানুষ এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে যায়। প্রকৃতির এই মজার ক্রিয়াকে বলা হয় লাইট পিলার। সূর্যের আলো, চাঁদের আলো এমনকি শহরের বাতি থেকেও সৃষ্টি হতে পারে এমন আলোর রেখা।
বায়ুমন্ডলে আড়াআড়িভাবে ভেসে বেড়ানো বরফ কণার মধ্য দিয়ে আলোর প্রতিফলন ঘটলে এই লাইট পিলার তৈরী হয়। সূর্যরশ্মি থেকে সৃষ্ট এধরণের পিলারকে বলে সান পিলার।
আলোর এই খেলার দেখা মেলে তখনই যখন তাপমাত্রা হিমাংকের নিচে থাকে। প্রবল ঠান্ডা উপেক্ষা করেই ভিড় জমে দর্শনার্থীদের। জীবনে এমন মুহুর্ত একবার না দেখলেই নয়।
এই ছিলো পৃথিবীর ১০ টি আশ্চর্যজনক এবং অদ্ভুত সুন্দর স্থানগুলো সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত কিছু তথ্য। সবগুলো তথ্যই ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। আপনি যদি এই আর্টিকেল টি পড়ে নতুন কোনো স্থান সম্পর্কে জানতে পারেন, তাহলে কমেন্টে জানাতে পারেন।
আমাদের এই পৃথিবী অনেক সম্পদ, সৌন্দর্য এবং রহস্যময়তায় ভরপুর। কিন্তু আমরা মানুষরাই দিন দিন পৃথিবীর এই রুপকে বদলে ভয়ংকর রুপ দিচ্ছি।
ReplyDeleteWrite your opinion